কৃষিবিদ মো. রেজাউল ইসলাম
বিপুল সম্ভাবনার এই দেশ বাংলাদেশ। কৃষিবান্ধব এই সরকারের নিপুণ ছোঁয়ায় কৃষিতে সাফল্য ঈর্ষণীয়। বিগত বছরগুলোতে ফল উৎপাদনে অনেক এগিয়েছে দেশ। প্রতি বছরই বিভিন্ন ধরনের ফলের নতুন নতুন বাগান সৃজন হচ্ছে। ফলের রোগ এবং পোকা ফল উৎপাদনের অন্যতম প্রধান বাধা। অন্যান্য ফসলের মতো আধুনিক সার, পানি ব্যবস্থাপনা ও বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফলের ব্যাপক উৎপাদন বৃদ্ধি সম্ভব। পোকা ও রোগের জন্য অনুক‚ল অবস্থাগুলো যাতে না হয় সেদিকে যতœবান হলে রোগ ও পোকা ব্যবস্থাপনা অনেকটা সহজ হয়ে যায়। ফলের বালাই দমনে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ কীটনাশক ও রোগনাশক ব্যবহৃত হয় । এর কারণে ফলও আর নিরাপদ থাকছে না। নিরাপদ ফল ও ফলের অধিক উৎপাদনে তাই সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার অনুসরণ অত্যন্ত জরুরি।
ফল উৎপাদনে পোকামাকড় ও রোগবালাইয়ের সমন্বিত ব্যবস্থাপনা : ফসল উৎপাদনে পোকামাকড় ব্যবস্থাপনায় একটিমাত্র পদ্ধতি কার্যকর নাও হতে পারে। সফলভাবে বালাই ব্যবস্থাপনার জন্য বালাই দমনের বিভিন্ন পদ্ধতি সমন্বিতভাবে এবং পর্যায়ক্রমে প্রয়োগ করা প্রয়োজন। নিচে ফলের সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার পদ্ধতিসমূহ আলোচনা করা হলো।
১. পরিষ্কারÑপরিচ্ছন্ন চাষাবাদ করে ফলের পোকা ব্যবস্থাপনা
আম সংগ্রহের পর গাছের সকল পরগাছা ও পরজীবী উদ্ভিদ ধ্বংস করতে হবে। বর্ষা মৌসুম শেষে বিশেষত জুলাই-আগস্ট মাসে আম গাছের অপ্রয়োজনীয় মৃত ও অর্ধ-মৃত ডালপালা ছাঁটাই করে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করলে হপারের প্রাদুর্ভাব ৩০-৪০ শতাংশ কমে যায়। মার্চ-এপ্রিল মাসে ঝরে যাওয়া আক্রান্ত কচি আম মাটি থেকে সংগ্রহ করে ধ্বংস করলে আমের ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ কমে যায়। মাছি পোকাক্রান্ত আমগুলো সংগ্রহপূর্বক মাটিতে গভীর গর্ত করে পুঁতে ফেলতে হবে। আমের ফলের উইভিল বা ভোমরা পোকা দমনের জন্য-জানুয়ারি-ফেব্রæয়ারি মাসে প্রতিটি আম গাছের চারদিকে ৪ মিটার ব্যাসার্ধের বৃত্তের মধ্যের সকল আগাছা পরিষ্কার করে ভালোভাবে মাটি কুপিয়ে উল্টে দিলে মাটিতে থাকা উইভিলগুলো ধ্বংস হবে। আমের ছাতরা পোকা দমনের জন্য আম বাগান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। মাটিতে পড়ে থাকা নতুন কাটা পাতা সংগ্রহ করে ধ্বংস করলে আমের পাতা কাটা উইভিল পোকার সংখ্যা কমিয়ে ফেলা সম্ভব। আম সংগ্রহের পর (জুলাই-আগস্ট মাসে) গল আক্রান্ত পাতার শাখাসমূহ কেটে বাগান থেকে যত শিগগির সম্ভব সরিয়ে নিতে হবে। প্রতি বছর আম বাগানের পরিচর্যা ভালো থাকলে পাতায় গল সৃষ্টিকারী পোকার সংখ্যা পর্যায়ক্রমে কমে যাবে। কাঁঠালের এবং পেয়ারার ফল ছিদ্রকারী পোকা দমনের জন্য আক্রান্ত কাঁঠাল ও পেয়ারা মাটিতে পুঁতে ধ্বংস করে ফেলতে হবে। লিচু পাতার লাল ক্ষুদ্র মাকড় দ্বারা আক্রান্ত পাতা সংগ্রহ করে আগুনে পুড়ে ফেলতে হবে। লাল ক্ষুদ্র মাকড় দ্বারা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত গাছের অগ্রভাগ জুন-আগস্ট মাসে এবং কম আক্রান্ত গাছের অগ্রভাগ আগস্ট মাসে ছাঁটাই করে আগুনে পুড়ে ধ্বংস করা উচিত। এ ব্যবস্থা ২-৩ বছর অবলম্বন করে লিচুর মাকড় দমন করা সম্ভব। বর্ষা মৌসুমের শেষে বছরে একবার পূর্ণ বয়স্ক লিচু গাছের অপ্রয়োজনীয় মৃত, অর্ধমৃত ডালপালা ছাঁটাই করে আলো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করলে লিচুর ফল ছিদ্রকারী পোকার প্রাদুর্ভাব কমে যায়। কলার উইভিল পোকা দমনের জন্য ফসলের অবশিষ্টাংশ পুড়িয়ে ধ্বংস করতে হবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ ও কুলগাছের অসময়ের ফুল ও কুড়ি নষ্ট করে ফেলে কুলের ফল ছিদ্রকারী উইভিল দমন করা যায় । কুলের টিউব স্পিটল বাগ দমনের জন্য পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ করতে হবে, শাখা প্রশাখা সংগ্রহ করে ধ্বংস করতে হবে। ডালিমের ফল ছিদ্রকারী পোকা দমনের জন্য ছিদ্রযুক্ত ফল সংগ্রহ করে মাটি চাপা দিতে হবে।
২. ফল ব্যাগিং করে পোকা ব্যবস্থাপনা
ফল সংগ্রহের এক মাস পূর্বে প্রতিটি আমকে কাগজের ব্যাগ
(বাঁশ পাতার তৈরি) দিয়ে মুড়িয়ে দিলে আমের মাছি পোকার
আক্রমণ সম্পূর্ণভাবে রোধ করা যায়। খাট জাতের আম গাছে মাছি পোকা দমনে এ পদ্ধতিটি অত্যন্ত কার্যকর। ছিদ্রযুক্ত পলিব্যাগ দ্বারা পেয়ারা ব্যাগিং করে সফলতার সাথে পেয়ারার মাছি পোকা ও পেয়ারার ফল ছিদ্রকারী পোকা দমন করা যায়। লিচু ফল সবুজ থেকে বাদামি রঙ ধারণ করার সময় ১০০-১৫০টি ফল এক সাথে করে মশারির নেট দিয়ে তৈরি ব্যাগ দিয়ে ব্যাগিং করলে লিচুর ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ হবে না এবং বাদুড়ের আক্রমণও কমে যাবে। কলার মোচা বের হওয়ার সাথে সাথে এবং ছড়িতে কলা বের হওয়ার পূর্বেই ৪২ ইঞ্চি ল¤¦া ও ৩০ ইঞ্চি প্রস্থের দু’মুখো খোলা একটি পলিথিন ব্যাগের একমুখ মোচার ভেতর ঢুকিয়ে বেঁধে দিলে কলার পাতা ও ফলের বিট্ল পোকা সহজেই দমন করা যায়। নার্সারিতে নতুন বের হওয়া পাতা সমেত ডগাকে মশারির নেট দিয়ে ঢেকে দিলে পাতা কাটা উইভিল পোকার আক্রমণ কম হয়। ডালিমের ফল ছিদ্রকারী পোকা দমনের জন্য ফল মার্বেল আকারের হলে ব্যাগিং করতে হবে।
৩. ফলের মাছি পোকা দমনের জন্য আকর্ষণ ও মেরে ফেলা পদ্ধতির ফাঁদ ব্যবহার করে এ পোকার স্ত্রী ও পুরুষ উভয়ই মেরে ফেলা
স্ত্রী মাছি পোকাকে আকৃষ্ট করে মেরে ফেলার জন্য ফাঁদ ক্ষেতের ভেতরের দিকের গাছে / ডালে / খুঁটিতে ১০-১২ মিটার দূরে দূরে ঝুলিয়ে দিতে হবে। গাছ বড় হলে একই গাছে একাধিক ফাঁদ ব্যবহার করতে হবে। টিউবের মধ্যকার জৈব বালাইনাশক মিশ্রিত জেল বা পেস্টের মতো পদার্থ ক্ষেতের সীমানা লাইনে অবস্থিত গাছে বা ডালে বা খুঁটিতে মাটি হতে ৪-৫ ফুট উপরে ১০-১২ মিটার বা ৩৫-৪০ ফুট দূরে দূরে অল্প পরিমাণ লাগিয়ে দিতে হবে।
৪. ফলের মাছি পোকা দমনের জন্য সেক্স ফেরোমোনের ব্যবহার : ফল বহনকারী ডালে সময়মতো মিথাইল ইউজিনল ফেরোমন ট্রাপ স্থাপন করে সফলতার সাথে ফলের মাছি পোকা দমন করা যায়। সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ১২ মিটার দূরে দূরে জমিতে স্থাপন করতে হবে। সেক্স ফেরোমন ফাঁদে খেয়াল রাখতে হবে যেন ফাঁদের তলায় সাবান পানি থাকে।
৫. জৈব বালাইনাশকের ব্যবহার
কাঁঠালের ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ হলে নিমতেল (প্রতি লিটার পানিতে ১০.০ মিলিলিটার হারে) + ট্রিক্স (প্রতি লিটার পানিতে ৫.০ মিলিলিটার হারে) মিশিয়ে ¯েপ্র করতে হবে। অর্ধ ভাঙ্গা নিমের বীজ (প্রতি কেজি ২০ লিটার পানিতে) পানির মধ্যে ১২ ঘণ্টা যাবৎ ভিজিয়ে রাখার পর উক্ত পানি আক্রান্ত গাছে ৭ দিন পর পর ¯েপ্র করে পেয়ারার সাদা মাছি পোকা দমন করা যায়। পেয়ারার সাদা মাছি পোকা ব্যবস্থাপনায় প্রাথমিক অবস্থায় আক্রান্ত পাতায় সাবান মিশ্রিত পানি (৫.০ গ্রাম সাবানের গুঁড়া প্রতি লিটার পানিতে) স্প্রে করে ভালো ফল লাভ করা যায়।
ফল গাছে মিলিবাগ বা ছাতরা পোকা বা সাদা মাছির আক্রমণ হলে পটাসিয়াম সল্ট অব ফ্যাটি এসিড (ফাইটোক্লিন বা অন্য নামের) নামক জৈব বালাইনাশক প্রতি লিটার পানিতে ১০.০ মিলিলিটার হারে মিশিয়ে স্প্রে করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
৬.যান্ত্রিক দমন
ফল গাছের মিলিবাগ বা ছাতরা পোকা ব্যবস্থাপনার জন্য অক্টোবর-নভেম্বর মাসে গাছের গোড়া থেকে ২-৩ ফুট উপরে কাÐে প্যাকেজিং টেপ দ্বারা ব্যান্ডিং করতে হবে, যাতে করে মিলিবাগ বা ছাতরা পোকার সদ্য প্রস্ফুটিত নিম্ফগুলো গাছে উঠতে না পারে। প্রয়োজনে ব্যান্ডিং এর নিচে জমা হওয়া নিম্ফগুলো পটাশিয়াম সল্ট অব ফ্যাটি এসিড (ফাইটোক্লিন বা অন্য নামের) নামক জৈব বালাইনাশক প্রতি লিটার পানিতে ১০.০ মিলিলিটার হারে অথবা কার্বারিল (সেভিন বা অন্য নামের) ৮৫ এসপি নামক কীটনাশক প্রতি লিটার পানিতে ২.০ গ্রাম হারে মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করলে ছাতরা পোকার আক্রমণ কমানো সম্ভব হবে।
৭. রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার
সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার অন্যান্য পদ্ধতি অবলম্বন করলে রাসায়নিক কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজন নাও হতে পারে। রাসায়নিক কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজন হলে ফসল সংগ্রহের অপেক্ষমাণ সময় অনুসরণ করে কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে। আম গাছে মুকুল আসার ১০ দিনের মধ্যে অবশ্যই ফুল ফুটে যাবার আগে ১মবার এবং এর ৪-৫ সপ্তাহ পর আম মটরদানা আকৃতির হলে ২য়বার প্রতি লিটার পানির সাথে ইমিডাক্লোপ্রিড (কনফিডর বা অন্য নামের) ৭০ ডবিøউজি নামক কীটনাশক ০.২ গ্রাম হারে অথবা সাইপারমেথ্রিন (রিপকর্ড বা অন্য নামের) ১০ ইসি নামক কীটনাশক ১.০ মিলিলিটার হারে অথবা ল্যামডা সাইহ্যালোথ্রিন (ক্যারাটে বা অন্য নামের) ২.৫ ইসি নামক কীটনাশক ১.০ মিলিলিটার হারে মিশিয়ে আম গাছের কাÐ, শাখা-প্রশাখা, পাতা ও মুকুল ভালোভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করলে আমের হপার পোকা ভালোভাবে দমন করা সম্ভব হবে।
কীটনাশক প্রয়োগ করে আমের ফলের উইভিল বা ভোমরা পোকা দমন করা বেশ ব্যয়সাধ্য। সাধারণত মার্চ-এপ্রিল মাসে উইভিলগুলো গাছে উঠা শুরু করে। এ সময় প্রতি লিটার পানিতে ২.০ মিলিলিটার হারে ফেনিট্রোথিয়ন (সুমিথিয়ন বা অন্য নামের) ৫০ ইসি নামক কীটনাশক মিশিয়ে গাছের কাÐ, শাখা-প্রশাখা ও পাতা ভালোভাবে ভিজিয়ে ১৫ দিন অন্তর অন্তর ২-৩ বার স্প্রে করা যেতে পারে।
কাঁঠালের ফল ছিদ্রকারী পোকার ব্যাপক আক্রমণ হলে ডাইমিথোয়েট জাতীয় কীটনাশক (প্রতি লিটার পানিতে ২.০ মিলিলিটার হারে) ফুট পাম্পের সাহায্যে ¯েপ্র করতে হবে। লিচু পাতার ক্ষুদ্র মাকড় আক্রমণের হার অত্যন্ত বেশি হলে মাকড়নাশক ওমাইট (প্রতি লিটার পানিতে ২.০ মিলিলিটার হারে) বা এবামেকটিন ১.৮ ইসি (প্রতি লিটার পানিতে ১.২ মিলিলিটার হারে) ¯েপ্র করে মাকড় দমন করা যায়। লিচু গাছে মুকুল আসার ১০ দিনের মধ্যে একবার এবং একমাস পর আর একবার প্রতি লিটার পানির সাথে ১.০ মিলিলিটার হারে সাইপারমেথ্রিন (রিপকর্ড বা অন্য নামের) ১০ ইসি মিশিয়ে লিচু গাছের কাÐ, শাখা-প্রশাখা, পাতা এবং মুকুল ভালোভাবে ¯েপ্র করে লিচুর ফল ছিদ্রকারী পোকা দমন করা সম্ভব।
উইভিল আক্রান্ত কলা গাছের গোড়ায় হেক্টর প্রতি ২০ কেজি হারে কার্বফুরান (ফুরাডান) ৩জি নামক দানাদার কীটনাশক প্রয়োগ করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যেতে পারে। পেয়ারার সাদা মাছি পোকার আক্রমণের হার বেশি হলে এডমায়ার ২০০ এমএল (প্রতি লিটার পানিতে ০.২৫ মিলিলিটার) অথবা কোরোনডা (এসিফেট ও ফেনভেলারেট মিশ্রণ) প্রতি লিটার পানিতে ০.৭৫ মিলি মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর আক্রান্ত গাছে ¯েপ্র করতে হবে।
ফলের রোগের সমন্বিত ব্যবস্থাপনা
ফল গাছের জীবাণুজনিত এবং অপুষ্টিজনিত রোগের কারণেও ফল উৎপাদন ব্যাহত হয়। সমন্বিত ব্যবস্থার মাধ্যমে এই সমস্যা সহজেই দূর করা সম্ভব।
ফল সংগ্রহ শেষ হলে ডাল ও ফলের বোঁটা ছাঁটাই করে দিতে হবে, রোগাক্রান্ত ডালপালা কেটে ফেলতে হবে এবং কাটা অংশে বোর্দোপেস্ট লাগাতে হবে। রোগাক্রান্ত গাছে বোর্দোমিক্সার (১০০ গ্রাম চুন, ১০০ গ্রাম তুতে ও ১০ লিটার পানি অথবা ১০০ গ্রাম চুন, ১০০ গ্রাম তুতে ও ৫ লিটার পানি অনুপাত) তৈরি করে স্প্রে করতে হবে।
গাছের নিচের পরিত্যক্ত ফল ও গাছের আক্রান্ত ফল সংগ্রহ করে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে। রোগাক্রান্ত গাছ ধ্বংস করতে হবে। আমের ক্ষেত্রে গাছে মুকুল আসার পর একবার ও ফল মার্বেল আকৃতির হলে আর একবার টিল্ট ২৫০ ইসি অথবা ডাইথেন এম -৪৫ অথবা রিডোমিল গোল্ড প্রতি লিটার পানিতে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। এতে ফল পচা রোগ মুকুল সাদা হয়ে ঝরে যাওয়া রোগ দমন হবে।
কাঁঠালের মুচি পচা রোগ দমনের জন্য ডাইথেন এম -৪৫ অথবা রিডোমিল গোল্ড প্রতি লিটার পানিতে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
অনুমোদিত দূরত্বে গাছ লাগাতে হবে। গাছে আলোবাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ করতে হবে এবং প্রয়োজনে অনুমোদিত বালাইনাশক স্প্রে করতে হবে। ফল গাছে বছরে দুইবার অনুমোদিত মাত্রায় জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হবে। ফল ঝরা ও ফল ফাটা রোধের জন্য অন্যান্য সারের সাথে বোরন সার প্রয়োগ করতে হবে। রাসায়নিক বালাইনাশক ব্যবহার করলে বালাইনাশকের অপেক্ষমাণ সময় মেনে ফল সংগ্রহ করতে হবে। বর্তমান সরকারের কৃষিবান্ধব নীতির আলোকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মাঠপর্যায়ে নিরাপদ ফসল উৎপাদনে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার সম্প্রসারণ কার্যক্রম চলমান রেখেছে। কৃষি গবেষণা কর্তৃক উদ্ভাবিত জৈব বালাইনাশক ভিত্তিক বালাই ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি সম্প্রসারণ করছে। জৈব বালাইনাশক প্রযুক্তি ও রাসায়নিক বালাইনাশক ব্যবহার প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ ফল উৎপাদন গবেষণা ও সম্প্রসারণ কার্যক্রম চলমান থাকলে ফলের উৎপাদন যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনি ভোক্তার কাছে নিরাপদ ফল সরবরাহ নিশ্চিত হবে। য়
উপপ্রকল্প পরিচালক, বাংলাদেশ শাকসবজি, ফল ও পান ফসলের পোকামাকড় ও রোগবালাই ব্যবস্থাপনায় জৈব বালাইনাশক ভিত্তিক প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প, খামারবাড়ি, ঢাকা, মোবাইল : ৯১৩৩৬২৩ ই-মেইল : ddipm@dae.gov.bd